আজ সোমবার, ১৮ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

লাশ হলে তারা আসে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নবাগত দম্পতি, মায়ের সাথে সন্তানের মৃত্যু এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের সেন্টাল খেয়াঘাটের ট্রলার ও নৌকা ডুবির ঘটনায়। বেশির ভাগ দূর্ঘটনাই বাল্কহেডের ধাক্কায় ঘটেছে। ঘটনার পর ডুবে যাওয়া মানুষ গুলো কে উদ্ধারের জন্য নানা তৎপরতা চালায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে বছর জুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে বাল্কহেড ও জাহাজ চলাচল করলে তা নিয়ন্ত্রনে রাখতে তেমন তৎপরতা দেখা যায় নৌ নিরাপত্তা বাহিনীকে।
শীতলক্ষ্যায় চলাচলরত নৌ চালক ও যাত্রীরা জানান, মানুষ মারা গেলে পুলিশ ও প্রশাসনের নানা তৎপরতা দেখা যায় কিন্তু সারা বছর তাদের খোঁজ থাকে না। বড় বড় নৌযান গুলো ছোট ছোট নৌকা ও ট্রলারের উপর উঠিয়ে দিয়ে চলে যায়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এসে লাশ উদ্ধার করে। দূর্ঘনায় মামলা হলেও বিচার হয় না। পুলিশ ও প্রশাসন যদি কঠোর হয় তাহলে বুঁকিপূর্ণ ভাবে নদীতে নৌযান চলাচল করতে পারতো না।
তবে নারায়ণগঞ্জ নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি পুলিশ মো. আব্দুল হাকিম বলছেন, দিনে বাল্কহেড চলতে পারবে তবে রাতে নয়। নদীতে নৌ পুলিশ আছে। দূর্ঘটনা ঘটলে মামলা হয় সদর থানায় তবে নৌ পুলিশ মামলার তদন্ত করা শুরু করেছে গসমাস থেকে।
জানা গেছে,৭ জুলাই দুপুরে শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দর ঘাট এলাকায় একটি জাহাজের ধাক্কায় আল কুদ্দুস নামের একটি বাল্কহেড ডুবে যায়। এ ঘটনায় মারা গেছে বাদল নামে বাল্কহেডের মাস্টার।
২০১৯ সালে সালে নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট এলাকা যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে এক নারীর (৩০) মারা যায়। পরে লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।
২০১৮ সালে সেন্ট্রাল খেয়াঘাট থেকে প্রায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর মদনগঞ্জ ঘাটের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে লঞ্চের ধাক্কায় একটি যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
২০১৬ শীতলক্ষ্যা নদীর মদনগঞ্জ এলাকায় কার্গো ট্রলারের ধাক্কায় যাত্রীবাহী একটি ট্রলার ডুবে যায়। এ ঘটনায় দুই শিশু নিখোঁজসহ আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। পরে ওই দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করেে নৌ পুলিশ।
২০১৫ সালে ২২ এপ্রিল সকালে শীতলক্ষ্যা নদীর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট এলাকা থেকে ১০-১২ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা শীতলক্ষ্যা পার হওয়ার সময় বালুবাহী একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। পরে মাহমুদ নগর এলাকায় নদীতে ভাসমান অবস্থায় শিশু সাব্বির আহমেদ স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করা হয় এবং কুমুদিনি নদীতে ভাসমান অবস্থায় সংলগ্ন এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় মা সেতু বেগমের (২৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
২০১৪ ট্রলার ডুবির ঘটনায় বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির ছাত্র রাকিবুল হাসানের (২০) মারা যায়। পরে কেরোসিন ঘাট এলাকায় রাকিবুলের লাশ ভেসে উঠেলে পুলিশ উদ্ধার করে নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।